ভ্যাপসা গরমে নানা রোগব্যাধির মতো হিট স্ট্রোক অন্যতম একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। তবে সামান্য সচেতনতা ও কিছু নিয়ম মেনে চললে এ সমস্যা এড়ানো সম্ভব। গরমে হিট স্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ এবং করণীয় সম্পর্কে রিজবাংলা-কে পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মোঃ রাসেল সিকদার। লেখাটি সম্পাদনা করেছেন নাসিম রুশেলী।
হিট স্ট্রোক কী?
হিট স্ট্রোক হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াস বা তার বেশি হয়ে যায় এবং তা শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় গরমে কাজ করলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, রক্তচাপ কমে, গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং কিডনি, হৃদপিণ্ড বা মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণসমূহ
১. শরীরের তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াস বা তার বেশি
২. তীব্র মাথাব্যথা
৩. বিভ্রান্তি বা চেতনা হারানো
৪. ঘাম বন্ধ হয়ে গা শুকিয়ে যাওয়া
৫. দুর্বল ও দ্রুত হৃদস্পন্দন
৬. শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হওয়া
৭. ত্বক লালচে, গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া
৮. বমি বা বমি বমি ভাব
৯. প্রচণ্ড পিপাসা
১০. খিচুনি
১১. চোখে ঝাপসা দেখা বা কথা বলার ক্ষমতা হারানো
হিট স্ট্রোকের সম্ভাব্য কারণ
-
দীর্ঘ সময় রোদে অবস্থান করা
-
গরমে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম
-
তাপ ধরে রাখে এমন পোশাক পরা
-
শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা
প্রাথমিক করণীয়
১. আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদ বা গরম এলাকা থেকে সরিয়ে ছায়া বা ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যান
২. আঁটসাঁট পোশাক খুলে দিন বা ঢিলে করুন
৩. শরীর ঠান্ডা করার জন্য ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দিন, ভেজা কাপড় দিয়ে মুছুন বা বরফ মোড়ানো কাপড় গলায়, বগলে বা কুঁচকিতে চেপে ধরুন
৪. জ্ঞান থাকলে অল্প অল্প করে ঠান্ডা পানি খেতে দিন (জোর করে নয়)
৫. দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে যা করবেন
-
প্রচুর পানি পান করুন
-
হালকা রঙের ঢিলেঢালা ও পাতলা কাপড় পরুন
-
দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে রোদে না বেরোনোই ভালো
-
ব্যায়াম করতে হলে সকালে বা সন্ধ্যায় করুন
-
সম্ভব হলে ঠান্ডা বা বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে থাকুন
-
বেশি করে পানি-সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খান (যেমন: তরমুজ, শশা)
-
অস্বাভাবিক দুর্বলতা, মাথা ঘোরা বা অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করলে বিশ্রাম নিন এবং ঠান্ডা স্থানে যান