Ridge Bangla

বৈধ অভিবাসীদের দিকেও বহিষ্কারের চোখ ট্রাম্প প্রশাসনের

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীরাও এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন অভিবাসন দমন অভিযানের আওতায় পড়েছেন। প্রশাসন বলছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বহিষ্কার কর্মসূচির অংশ। নতুন টার্গেটে এসেছে ‘টেম্পোরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাস’ (টিপিএস) পাওয়া প্রায় ১২ লাখ অভিবাসী, যাদের মধ্যে হাইতি, ভেনেজুয়েলা, আফগানিস্তান, হন্ডুরাস এবং নিকারাগুয়ার নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এর আগে যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পালিয়ে আসা এসব অভিবাসীদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়ে ছিলো যুক্তরাষ্ট্র। তারা নিয়মিত নবায়নের মাধ্যমে কাজ ও বসবাসের সুযোগ পেতেন। কিন্তু সম্প্রতি হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিব ক্রিস্টি নোমের ঘোষণায় এসব সুবিধা বাতিলের পথে প্রশাসন অগ্রসর হয়েছে। অ্যাক্সিওস-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রায় ৭ লাখ টিপিএসধারীর সুরক্ষা ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাইতির ৩.৫ লাখ, ভেনেজুয়েলার সমান সংখ্যক এবং আফগানিস্তানের ১১ হাজার ৭০০ নাগরিক। হন্ডুরাসের ৫২ হাজার এবং নিকারাগুয়ার প্রায় ৩ হাজার মানুষও পড়েছেন সংকটে। হাইতির এক অভিবাসী বলেন, “আমি অপরাধ করিনি। যদি আমাকে ফেরত পাঠানো হয়, শুধু প্রার্থনা করব যেন গুলি খেয়ে মরতে না হয়।”

এছাড়া মানবিক কারণে দেওয়া ‘প্যারোল’ সুবিধার আওতায় থাকা অনেক অভিবাসীকেও এখন তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। আদালতের শুনানি বাতিল হচ্ছে, জামিনের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে এবং ইমিগ্রেশন অফিস আইসিই এখন আটক করেই ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু করেছে। মানবাধিকার কর্মীরা একে বলছেন ‘রিমুভালপালুজা’ বা ‘বহিষ্কার উৎসব’।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, বিচার চলাকালীন অভিবাসীদের দীর্ঘ সময় আটকে রাখা যাবে এবং তারা জামিন চাইতেও পারবেন না। এই পদক্ষেপ কার্যকর করতে মার্কিন কংগ্রেস ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট পাস করেছে, যা অবৈধ অভিবাসীদের আটক ও বহিষ্কার কার্যক্রমে ব্যবহৃত হবে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেন, “টিপিএস প্রোগ্রাম কখনোই স্থায়ী নাগরিকত্বের পথ ছিল না। বাইডেন প্রশাসন এই সুবিধাগুলোর অপব্যবহার করেছে।” বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতি বৈধ ও অবৈধ—উভয় অভিবাসীর বিরুদ্ধেই দমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।

আরো পড়ুন