Ridge Bangla

ফিরে দেখা রক্তাক্ত জুলাই: গণঅভ্যুত্থানের দিনলিপির ১৮তম দিনের ঘটনা

জুলাই আন্দোলনে অচল হয়ে পড়ে পুরো দেশ। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডাকা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য শহর কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। প্রধান সড়ক ও মহাসড়কগুলো অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা, ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সারা দেশে মোতায়েন করা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সকালে এবং দুপুরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। মেরুল বাড্ডায় শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি টিমকে অবরুদ্ধ করে ফেললে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।

দুপুরের পর থেকে সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীর রমনা এলাকায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরসহ একাধিক সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে বহু শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্য আহত হন। কয়েকটি জেলায় হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে।

আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি ছিল সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা। সরকার পক্ষ থেকে ৫৬ শতাংশ কোটার পরিবর্তে ২০ শতাংশ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সরকার আলোচনা করতে প্রস্তুত, কিন্তু আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

রাত ৯টার পর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা জনমনে আরও আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অপরদিকে প্রশাসন যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার অঙ্গীকার করে। সারা দেশে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে এই দিনে।

আরো পড়ুন