টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্য, পানি, ওষুধসহ সব ধরনের ত্রাণসামগ্রী প্রবেশে বাধা দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলকে চরম দুর্দশার মুখে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত রোববার গাজার সরকারি মিডিয়া দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার শিশু চরম অপুষ্টিজনিত মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৭০ হাজার শিশু বিভিন্ন অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ৩ হাজার ৫০০’র বেশি শিশু জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “গাজার ১১ লাখ শিশু যখন ন্যূনতম পুষ্টির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ইসরায়েলের জন্য উৎসাহ হয়ে উঠছে। দখলদার ইসরায়েল ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।”
ইতোমধ্যে ক্ষুধার কারণে অন্তত ৫৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ এখন ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। স্থানীয় বাজারে যেটুকু খাদ্যসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে এবং একটি গোটা জাতির বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধা’কে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এদিকে ইসরায়েল তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছে, হামাসের হাতে বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের মুক্ত করতেই এই অবরোধ জারি রাখা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৩ জন নিহত এবং ১১৯ জন আহত হয়েছেন। ১৯ মাস ধরে চলা আগ্রাসনে মোট প্রাণহানি হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১০ জন।