চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা, যেখানে রাজস্ব প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৩.২৪ শতাংশ।
১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। তবে আদায় হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক—কোনো খাতেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
খাতভিত্তিক ঘাটতির চিত্র:
-
আয়কর খাত: লক্ষ্যমাত্রা ১,২৭,৬৮০ কোটি টাকা, আদায় ৯৪,৯৩৮ কোটি টাকা। ঘাটতি ৩২,৭৪১ কোটি টাকা।
-
ভ্যাট খাত: লক্ষ্যমাত্রা ১,২৯,৪২২ কোটি টাকা, আদায় ১,১১,২০২ কোটি টাকা। ঘাটতি ১৮,২২০ কোটি টাকা।
-
শুল্ক খাত: লক্ষ্যমাত্রা ১,০১,৬৩০ কোটি টাকা, আদায় মাত্র ৮১,১১৬ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১.৩৬ শতাংশ।
এপ্রিল মাসে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬,৫৮০ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৩০,৭৭০ কোটি টাকা, যার ঘাটতি ৫,৮১০ কোটি টাকা।
এনবিআরের মোট বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা পরে কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
ঘাটতির কারণ হিসেবে উঠে এসেছে:
-
চলমান অর্থনৈতিক মন্দা
-
মূল্যস্ফীতির প্রভাব
-
কর আদায়ে প্রশাসনিক অদক্ষতা
-
এনবিআর বিলুপ্তির দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলন ও কর্মবিরতি
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধারাবাহিক ঘাটতি সরকারকে ভর্তুকি হ্রাস, কর বৃদ্ধি কিংবা ব্যয়ের ক্ষেত্রে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করতে পারে। এতে সাধারণ জনগণও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
