অফসাইড—ফুটবলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইন, যা খেলার আইনের ১১ নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি এই নিয়মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিবর্তন এনেছে আন্তর্জাতিক ফুটবল আইন নির্ধারণকারী সংস্থা আইএফএবি (IFAB)। এর ফলে বিশ্ব ফুটবলে অফসাইডের সংজ্ঞা নতুন রূপ পেয়েছে।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, খেলোয়াড়ের অফসাইড অবস্থান নির্ধারণ করা হতো বল প্রথম স্পর্শ করার সময়। এতে করে একজন খেলোয়াড় বল থামিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পরে পাস করলে অফসাইড ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হতো। এই অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রথম আওয়াজ তোলে সুইডেনের তৃতীয় বিভাগের ছোট্ট ক্লাব টর্নস আইএফ।
২০২৩ সালে টর্নস আইএফ লক্ষ্য করে, নিয়মে একটি ফুটনোটে রয়েছে যে, বল থামিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পাস করলে সেটিকে অফসাইড ধরা হবে না। ক্লাবটি এই নিয়মকে অন্যায্য মনে করে এবং দুই বছর ধরে নিয়ম সংশোধনের দাবিতে অনড় অবস্থানে থাকে। শেষ পর্যন্ত আইএফএবি তাদের দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করে এবং নিয়ম সংশোধন করতে বাধ্য হয়।
আইএফএবির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডেভিড এলেরি ক্লাবটির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, “আমরা ক্লাবটির অধ্যবসায় ও যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিভঙ্গিকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি।”
টর্নস আইএফের খেলোয়াড় টিম নিলসেন জানান, “আইএফএবিকে বোঝাতে সময় লেগেছে, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত পেরেছি। ভিএআর ব্যবস্থার কারণে এসব স্পর্শকাতর মুহূর্ত সহজে ধরা যাচ্ছে, যদিও অনেকে এটিকে সময়ক্ষেপণকারী মনে করেন। তবে নিয়মের স্বচ্ছতা সবার আগে।”
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে আর কোনো খেলোয়াড় বল থামিয়ে অপেক্ষা করে পাস করে অফসাইড ফাঁকি দিতে পারবে না। এই পরিবর্তন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগসহ বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষ ফুটবল লিগগুলোতেও কার্যকর হবে।
বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে ছোট একটি ক্লাব কীভাবে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে, তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকল টর্নস আইএফ।
