বিদেশিদের ক্ষেত্রে ভিসা নিয়ে দুঃসংবাদ দিলো কানাডা

কানাডা দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য। উন্নতমানের শিক্ষা ব্যবস্থা, বন্ধুসুলভ অভিবাসন নীতি ও স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগের কারণে দেশটি বহু শিক্ষার্থীর স্বপ্নের দেশ হিসেবে পরিচিত। তবে সম্প্রতি কানাডা সরকার স্টাডি পারমিট ইস্যুতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আকস্মিক ধাক্কা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

এক লাফে ৩১% কমানো হয়েছে স্টাডি পারমিটের সংখ্যা।

হঠাৎ পরিবর্তনের পেছনে কারণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে কানাডার অভিবাসন ও শিক্ষা ব্যবস্থায় “সংখ্যার চেয়ে মান”–এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া। দেশটি চায় তার শ্রমবাজার, আবাসন সংকট এবং অভিবাসন ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা করতে। তবে এর ফল ভোগ করছেন কানাডার বিভিন্ন কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে আবেদনকারী হাজারো শিক্ষার্থী।

ভিসা প্রক্রিয়ায় কী পরিবর্তন আসছে?

• অতিরিক্ত নথিপত্র জমা দিতে হতে পারে

• আবেদন প্রক্রিয়া হতে পারে আগের চেয়ে দীর্ঘ

• ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার বাড়তে পারে

বিশেষ করে ব্যবসা, প্রযুক্তি ও ইঞ্জিনিয়ারিং–এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আবেদন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই পরিবর্তন সাময়িক, নাকি স্থায়ী?

এই কড়াকড়িকে আপাতত “নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ” বলা হলেও ভবিষ্যতে আরও পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। কানাডা সরকার চায় অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে, একই সঙ্গে দেশের ভিতরের চাহিদা ও ভারসাম্য নিশ্চিত করতে।

বিকল্প ভাবনায় শিক্ষার্থীরা

অনেক শিক্ষার্থী ও পরামর্শদাতা এখন অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিকল্প গন্তব্য বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়াও কানাডার নির্দিষ্ট কিছু প্রদেশ ও পাইলট প্রোগ্রামের সুযোগ খোঁজার কথাও বলা হচ্ছে, যেখানে শর্ত কিছুটা নমনীয়।

শক্তিশালী আবেদনই এখন মূল অস্ত্র

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন সময় আরও শক্তিশালী আবেদন প্রস্তুত করার—যাতে থাকে:

• যথাযথ ডকুমেন্টেশন

• স্পষ্ট ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

• প্রমাণযোগ্য শিক্ষা ও পেশাগত উদ্দেশ্য

শিক্ষার্থীদের জন্য বার্তা

এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা—বিশ্ববিদ্যালয় গন্তব্যের নীতিমালায় হঠাৎ পরিবর্তন আসতে পারে। তাই প্রস্তুতি, তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত এবং দ্রুত অভিযোজনের মানসিকতা এখন জরুরি।

এক কথায়, কানাডার নতুন নীতি মনে করিয়ে দেয়, আন্তর্জাতিক পড়াশোনার পথ সবসময় সরল নয়, তবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকলে যে কোনো বাধা জয় করা সম্ভব।