টানা দুদিনের ভারী বর্ষণে নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬৩ হাজার ৮৬০টি পরিবার। তবে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমায় সাময়িক স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয়দের মাঝে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে ২৬৮টি পরিবার। অতিবৃষ্টিতে জেলার বহু ঘরবাড়ি, সড়কপথ এবং ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা আবু নাসের বলেন, “বাড়িসহ আশপাশের এলাকা পানিতে সয়লাভ। আমরা আগের বন্যাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম।” কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গিয়াস উদ্দিন জানান, “এবার ফেনীর মুহুরী নদীর পানি উপচে আমাদের এলাকায় ক্ষতি করছে।”
সুবর্ণচরের চরকচ্ছপিয়া এলাকার কৃষক সিরাজ উদ্দিন বলেন, “আমন ধানের বীজ রোপণ করেছিলাম। মাঠে হাঁটুজল। এতে লোকসান হয়ে গেল।”
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী কয়েকদিনেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রায় ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, ১০১টি মেডিকেল টিম, ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ২ হাজার ৭৮০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৮ লাখ টাকা নগদ অর্থ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।” এ ছাড়া বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকরা মাঠপর্যায়ে তৎপর রয়েছে।