ঈদুল ফিতর বিশ্ব-মুসলিমদের প্রধান দুই ধর্মীয় উৎসবের মাঝে একটি। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিটি পরিবারে একধরনের উৎসবের আমেজ থাকে, যেখানে সবাই নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। নতুন পোশাক কেনা, বাড়ি পরিষ্কার ও সাজানো, বিশেষ খাবার প্রস্তুতি, এবং দানের মাধ্যমে গরিবদের সাহায্য করা- এসব প্রস্তুতির মাধ্যমে ঈদের আনন্দকে আরও স্মরণীয় করে তুলতে সবাই একত্রিত হয়। এই লেখায় আমরা ঈদের আগের কিছু সাধারণ প্রস্তুতি ও ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা করব, যা ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে তোলে।
নতুন পোশাক কেনা
মানুষ ঈদের দিনে পরার জন্য ঐতিহ্যবাহী বা আধুনিক নানা পোশাক কেনে। কিছু দেশে দর্জিদের কাছে কাস্টম-মেড পোশাকের অর্ডার বেড়ে যায়। বাজার ও শপিং মল ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে, আর বিক্রেতারা মেহেদি, গয়না ও ঐতিহ্যবাহী সুগন্ধির মতো উৎসবসামগ্রী বিক্রি করেন।
বাড়ি পরিষ্কার ও সাজানো
ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা হয় এবং কিছু সংস্কৃতিতে বাতি, মোমবাতি ও বিশেষ সাজসজ্জায় ঘর সাজানো হয়। অনেকেই পরিবারের আড্ডার জন্য বাড়িতে একটি অস্থায়ী সাজানো জায়গা তৈরি করেন। সেখানে ঈদের দিন সবাই মিলিত হয়ে গল্পগুজব ও আড্ডা দিয়ে থাকেন।
ঈদের খাবার প্রস্তুতি
ঐতিহ্যবাহী খাবারের পরিকল্পনা আগেভাগেই করা হয় এবং বড় আয়োজনে যেন কোনো ঘাটতি না থাকে, সেজন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ মিষ্টি ও ডেজার্ট অনেক সময় বাড়িতেই তৈরি করা হয় বা বেকারি থেকে কেনা হয়। অনেক পরিবারে রান্নার কাজে সবাই মিলে অংশ নেয়। বাংলাদেশে বেশিরভাগ বাড়িতে যেমন গরু, খাসি কিংবা মুরগির মাংস রান্না করা হয়, তেমনি বাইরের দেশগুলোতে তৈরি করা হয় বিশেষ সব কাবাব।
যাকাত ও ফিতরা বিতরণ
গরিবদের সাহায্য করার জন্য দান করা হয় যাকাত ও ফিতরা, যাতে সবাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। অনেকে এতিমখানা, আশ্রয়কেন্দ্র বা নিম্নআয়ের এলাকায় গিয়ে খাবার ও টাকা বিতরণ করেন, যা উদারতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধকে আরও দৃঢ় করে।
সামাজিক সম্পৃক্ততা
অনেক এলাকায় ঈদের আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, একসঙ্গে খাওয়ার আয়োজন এবং শিশুদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের অনেক গ্রামে আয়োজন করা হয় বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের প্রীতি ফুটবল বা ক্রিকেট ম্যাচের। এতে ঈদের আনন্দ আরও বাড়ে এবং বাসিন্দাদের মধ্যে একতা তৈরি হয়।