Ridge Bangla

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়-খাদ্যের সংকট, আশঙ্কা আরও আফটারশকের

মিয়ানমারে ভূমিকম্প

মিয়ানমারে গত সপ্তাহের ভয়াবহ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত হয়েছেন ২,০০০-এরও বেশি মানুষ। এই ঘটনায় ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে এখনো নিখোঁজ অন্তত ২৭০ জন, আহত হয়েছেন প্রায় ৩,৯০০ জন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছানো আন্তর্জাতিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলো বলছে- আশ্রয়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

মান্দালয়ে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (IRC) এক কর্মী জানান, “মানুষ এখনো আতঙ্কিত। ভূমিকম্পের পর আফটারশকের ভয়ে ঘরে ফিরতে পারছে না কেউ। অনেকেই রাস্তায় কিংবা খোলা মাঠে রাত কাটাচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, “যাদের ঘর অক্ষত থেকেছে, তারাও ঘুমাতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে জরুরি ভিত্তিতে তাঁবু, চিকিৎসা, খাবার ও পানি সরবরাহ এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। ফলে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগেও ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা সংস্থাগুলোর জন্য চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত, অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট, সেতু ও নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।

মান্দালয়ের এক বাসিন্দা বলেন, “সরঞ্জামের অভাবে মানুষ নিজেরাই লাশ তোলার চেষ্টা করছে। দিনভর ঘরের ভেতরে থাকলেও রাতে কেউ সাহস করে ঢুকছে না। এখন অনেকে রোদে পুড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

ভূমিকম্পে ব্যাংককে একটি অসমাপ্ত সুউচ্চ ভবন ধসে পড়েছে। সেখানে এখনো ধ্বংসস্তূপে জীবনের চিহ্ন খুঁজে চলছে উদ্ধার অভিযান। সর্বশেষ পাওয়া খবরে, ১৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, এখনো নিখোঁজ ৭৪ জন।

থাইল্যান্ডের শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধসে যাওয়া ভবনের স্থান থেকে সংগৃহীত কিছু ইস্পাত ছিল নিম্নমানের, যা ভবনের ধসে ভূমিকা রেখেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে থাই সরকার।

মিয়ানমারের সামরিক সরকার সোমবার থেকে এক সপ্তাহব্যাপী জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। তবে সহায়তার ক্ষেত্রে সামরিক জান্তার কঠোর নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় তৎপরতা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো, যেন ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।

আরো পড়ুন