রাজধানী ঢাকা বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো আন্দোলন বা বিক্ষোভে উত্তাল থাকে, যা সাধারণ মানুষের জনজীবনকে বারবার স্থবির করে দিচ্ছে। সর্বশেষ গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের মৃত্যুর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। একইদিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আবাসনের দাবিতে লংমার্চ করে পুলিশের বাধায় পড়েন, আহত হন অর্ধশতাধিক।
বৃহস্পতিবার কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জবির আন্দোলনকারীরা, আর নগর ভবনের সামনে মেয়র ইশরাক হোসেনের সমর্থনে চলে বিক্ষোভ। পাশাপাশি, নার্সিং শিক্ষার্থীরা স্নাতক সমমানের স্বীকৃতির দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন, পরে শহিদ মিনারে অবস্থান নেন।
এইসব আন্দোলনের ফলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। অফিসগামী মানুষ, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স এবং শ্রমজীবী মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। যদিও দাবিগুলো অনেক সময় যৌক্তিক এবং মানবিক, তবে আন্দোলনের ধরনে পরিবর্তন আনা সময়ের দাবি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্দোলন বা প্রতিবাদ হওয়া উচিত জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, জনদুর্ভোগের মাধ্যমে নয়। গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা করতে গিয়ে যদি জনস্বার্থ বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে তা আন্দোলনের নৈতিকতা হারায়। অন্যদিকে, প্রশাসনেরও উচিত অভিযোগ ও দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসা এবং সমাধান খোঁজা।
এছাড়া যানজট নিয়ন্ত্রণে একটি স্বতন্ত্র ও জরুরি কর্তৃপক্ষ গঠন করা প্রয়োজন, যারা রাজধানীর প্রতিদিনকার চলাচল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সময়মতো সমন্বয়মূলক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন।