Ridge Bangla

পোপ নির্বাচনই কি পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন নির্বাচন?

গণতন্ত্রের একটি অন্যতম প্রধান ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন। এই প্রক্রিয়ায় কোনো সংস্থা বা রাষ্ট্রের সদস্যরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। আধুনিক বিশ্বের এই নির্বাচন প্রক্রিয়া গোপনীয় হলেও অনেক ক্ষেত্রে ভোটদাতার প্রতিক্রিয়ায় বোঝা যায় তিনি কাকে ভোট দিয়েছেন। তবে খ্রিস্টান ক্যাথলিকদের ধর্মগুরু পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না। অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে পোপ নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া সমাপ্ত করা হয়, যেখানে ভোটদাতা এবং প্রার্থী কখনোই জানতে বা বুঝতে পারেন না কে কাকে ভোট দিল। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির রিপোর্টার সারাহ রেইন্সফোর্ড ভ্যাটিকান সিটি থেকে দাবি করেছেন, এটা অবশ্যই পৃথিবীর সবচেয়ে গোপনীয় নির্বাচন পদ্ধতি।

সারাহ তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, যখন পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচনের জন্য কার্ডিনালদের সিস্টিন চ্যাপেলে আটকে রাখা হবে, তখন প্রত্যেকেই গসপেল বা বাইবেলের ওপর শপথ করে প্রতিজ্ঞা করবেন যে, সেই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তারা আজীবন গোপন রাখবেন।

এটি শুধু কার্ডিনালদের জন্য নয়, বরং কনক্লেভ চলাকালীন ভ্যাটিকানে থাকা প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য—যেমন জরুরি প্রয়োজনে থাকা দুইজন চিকিৎসক, কিংবা যাঁরা কার্ডিনালদের খাবার পরিবেশন করেন সেই ডাইনিং রুমের কর্মীরাও।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবাই “সম্পূর্ণ ও চিরস্থায়ী গোপনীয়তা” পালনের শপথ নেন। নিশ্চিত হওয়ার জন্য সিস্টিন চ্যাপেল এবং দুটি অতিথিশালাও মাইক্রোফোন বা গোপন রেকর্ডিং যন্ত্রের জন্য তল্লাশি করা হবে।

প্রতিবেদনে ক্রাক্স সংবাদ সংস্থার সম্পাদক জন অ্যালেনের মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, “ফোন ও ওয়াই-ফাই সিগনাল যাতে ভেতরে বা বাইরে প্রবেশ না করতে পারে, সে জন্য ইলেকট্রনিক জ্যামার ব্যবহৃত হয়। ভ্যাটিকান বিচ্ছিন্নতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়।”

গোপনীয়তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিখ্যাত লকডাউন শুধু ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়াকে গোপন রাখার জন্যই নয়, বরং “দুরভিসন্ধিমূলক বাহিনী” যেন তথ্য চুরি করতে না পারে বা ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে—তা নিশ্চিত করাও এর উদ্দেশ্য। এছাড়াও, ভোট দেওয়ার প্রস্তুতির সময় লাল পোশাকধারী এই পুরুষদের (কার্ডিনালদের) ধর্ম-বহির্ভূত জগত ও তার প্রভাব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রাখাই এই ব্যবস্থার আরেকটি বড় কারণ।

আরো পড়ুন