বিশ্বজুড়ে অপ্রয়োজনীয় এবং মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে ভয়াবহভাবে বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। ফলে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মুখে পড়েছে শিশুরা। গবেষণা বলছে, ২০২২ সালে শুধু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট সংক্রমণের কারণে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৩০ লাখ শিশু।
অস্ট্রেলিয়ার মারডক চিলড্রেনস রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ক্লিনটন হেলথ অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভের যৌথ গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষক ড. ইয়ানহং জেসিকা হু এবং অধ্যাপক হার্ব হারওয়েলের নেতৃত্বে এই গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল। ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ‘ওয়াচ অ্যান্টিবায়োটিক’-এর রেজিস্ট্যান্স বেড়েছে ১৬০ শতাংশ, আর আফ্রিকায় ১২৬ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই পরিস্থিতিকে ‘মহামারির মতো হুমকি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বাংলাদেশেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, কিছু কিছু অ্যান্টিবায়োটিকে রেজিস্ট্যান্স হার ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
চিকিৎসকরা বলছেন, এখন প্রতিদিনের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স একটি নিয়মিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকদের অনিয়ন্ত্রিত প্রেসক্রিপশন, ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রেতাদের দায়িত্বহীনতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব এই বিপদের মূল কারণ। এমন অব্যবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সাধারণ সর্দি-কাশিতেও মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে এক সময় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসার যুগ হয়তো ইতিহাস হয়ে যাবে।