হাত ও পায়ের অতিরিক্ত ঘাম — চিকিৎসাবিজ্ঞানে যাকে Palmoplantar Hyperhidrosis বলা হয় — একটি বিব্রতকর ও অস্বস্তিকর শারীরিক সমস্যা। অনেক সময় শীতকালেও এটি দেখা দেয়, এবং এটি শুধু শারীরিক অসুবিধাই নয়, মানসিক চাপ ও আত্মবিশ্বাসের অভাবের কারণও হয়ে উঠতে পারে। বেশ কয়েকটি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে হাত-পা ঘেমে যাওয়া দেখা যেতে পারে, তাই সময়মতো কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
হাইপারহাইড্রোসিস
এই রোগে আক্রান্তদের হাত ও পা সবচেয়ে বেশি ঘামে। এটি দুই রকম হতে পারে —
১. প্রাথমিক হাইপারহাইড্রোসিস: কোনো নির্দিষ্ট রোগ ছাড়াই ঘটে।
২. দ্বিতীয়ক হাইপারহাইড্রোসিস: অন্য কোনো রোগের কারণে ঘটে।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে গেলে হাত-পা ঘেমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির কারণেও এমনটা হতে পারে। এর লক্ষণগুলো হলো— অতিরিক্ত ঘাম, হাত-পা ঝিম ঝিম করা ও দুর্বলতা।
মানসিক চাপ
ভয়, লজ্জা, উদ্বেগ বা মানসিক চাপে অনেকে অতিরিক্ত ঘামেন। এটি শরীরের ফাইট-অর-ফ্লাইট প্রতিক্রিয়ার একটি অংশ, যেখানে স্নায়ুতন্ত্র অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ করে। সঙ্গে থাকতে পারে বুক ধড়ফড়, তালু ঘামা, হাত কাঁপা ইত্যাদি উপসর্গ।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু ওষুধ যেমন— এন্টিডিপ্রেসেন্ট, হরমোনাল থেরাপি, স্টেরয়েড, ব্যথানাশক কিংবা ডায়াবেটিসের ওষুধ অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে।
অন্যান্য কারণ
– টাইফয়েড, টিউবারকুলোসিস বা ভাইরাল ইনফেকশনেও ঘামের সমস্যা হতে পারে।
– অটোনমিক নিউরোপ্যাথি নামক স্নায়বিক সমস্যায় শরীরের ঘাম নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুগুলো দুর্বল হয়ে যায়, যার ফলে হাত ও পা অতিরিক্ত ঘামে।
যদি নিয়মিত হাত-পা ঘেমে যায়, তবে তা অবহেলা না করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।