ঢাকার অন্যতম বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (UIU) টানা নয় দিন ধরে অচলাবস্থায় রয়েছে। উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করায় শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে।
এই সংকটের সূচনা ঘটে গত ২৬ এপ্রিল ‘UIU রিফর্ম’ আন্দোলনের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কাশেম মিয়ার পদত্যাগের মাধ্যমে। পরবর্তীতে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও দায়িত্ব ছাড়েন। ফলে ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার পেছনে ১৩ দফা দাবিকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে—অবকাঠামোগত উন্নয়ন, একাডেমিক পরিবেশের মানোন্নয়ন, অতিরিক্ত ফি বাতিল এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ। তাদের অভিযোগ, এসব দাবিকে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা করে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাস্টি বোর্ড একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে, যার প্রধান করা হয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমানকে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও নির্ধারিত সময় প্রায় শেষ হয়ে এলেও কোনো কার্যকর অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের পাঠানো ই-মেইলেরও কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ট্রাস্টি বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন আন্দোলন দমনে নানা কৌশল নিয়েছে এবং কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি। অনেকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বাণিজ্যিক মনোভাবের অভিযোগও তুলেছেন। তারা দ্রুত তদন্ত শেষ করে শিক্ষাকার্যক্রম পুনরায় শুরু করার পাশাপাশি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গঠনের দাবি জানিয়েছেন।