কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ভারতীয় দুইটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন ও জিও নিউজ জানিয়েছে, ভারতীয় বাহিনী আজাদ কাশ্মীর, মুজাফফরাবাদ ও ভাওয়ালপুরে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এসব হামলায় একটি মসজিদ, একটি পাওয়ার গ্রিড স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অন্তত তিনজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, “ভারতের কাপুরুষোচিত হামলার জবাবে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী দ্রুত পাল্টা ব্যবস্থা নেয় এবং দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে।” তিনি আরও জানান, ভারত নিজেদের আকাশসীমা থেকেই হামলা করেছে এবং পাকিস্তানের আকাশে প্রবেশ করার সাহস দেখায়নি। পাকিস্তানের বিমান বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এআরওয়াই নিউজকে বলেন, “ভারত বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তারা নিজেদের মাটি না ছেড়ে দূর থেকে কাপুরুষোচিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তবে আমরা যথাযথ জবাব দিতে প্রস্তুত।”
ভারতের পক্ষ থেকে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে, এটি ছিল “অপারেশন সিন্দুর”-এর অংশ, যেখানে পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়। ভারতের দাবি, ওইসব স্থানে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছিল এবং সেখান থেকেই ভারতের অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।
হামলার পর ভারতের সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে জানায়, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে। জয় হিন্দ।”
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়। এর পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে এবং একের পর এক পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। সর্বশেষ এই বিমান হামলা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়ার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।