Ridge Bangla

তাহলে কি ট্রাম্পের ভয়েই মার্কিন নাগরিকেরা ইউরোপে পাড়ি দিচ্ছেন?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম বিশ্বজুড়ে আলোচনা ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তার প্রশাসনের পদক্ষেপে শুধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই নয়, নিজের দেশ আমেরিকার নাগরিকদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতা। অনেক মার্কিন নাগরিক এখন ইউরোপে বসবাসের পরিকল্পনা করছেন বা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশ ছেড়ে যাওয়ার।

ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর নিউইয়র্কের ডরিস ডেভিস ও তার সঙ্গী সুসি বার্টলেট ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই সমকামী দম্পতি অভিবাসন আইনজীবীর সহায়তায় পর্তুগাল বা স্পেনে বসবাসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রয়টার্স জানায়, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মার্কিন নাগরিকদের ভিসা ও পাসপোর্ট আবেদন বেড়েছে।

  • ২০২৫ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ডে মার্কিন নাগরিকদের পাসপোর্ট আবেদন বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

  • ফ্রান্সে ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ২,৩৮৩টি দীর্ঘমেয়াদি ভিসার আবেদন জমা পড়ে, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

  • যুক্তরাজ্যে ২০২৪ সালের শেষ তিন মাসে মার্কিন পাসপোর্ট আবেদন গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এই ধরণের অভিবাসন প্রবণতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক বিভাজন, গৃহে বন্দুক হামলার আশঙ্কা এবং ট্রাম্পের নীতিগুলোই এর অন্যতম কারণ। এলজিবিটি+ জনগোষ্ঠীর অধিকারে হস্তক্ষেপ, ট্রান্সজেন্ডারদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের নিষেধাজ্ঞা, ও লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা সীমিত করার মতো সিদ্ধান্ত মার্কিন সমাজের একাংশকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

তবে এটি কোনো একমুখী প্রবণতা নয়। রিপাবলিকান সমর্থকরাও বাইডেন প্রশাসনের সময় ইতালির নাগরিকত্বের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। অভিবাসন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যে দেখা গেছে, প্রতিদিনই নতুন নতুন মার্কিন নাগরিক ইউরোপে যাওয়ার বিষয়ে তথ্য চাচ্ছেন।

তবে, ইউরোপেও ডানপন্থী রাজনীতির উত্থান ঘটছে বলে একে নিখুঁত বিকল্প বলা যাচ্ছে না। যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইস সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তথ্য অনুসন্ধানের হার ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

এই চলমান পরিস্থিতি ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রভাব, যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক বাস্তবতা, ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন প্রবণতার একটি বহুমাত্রিক চিত্র তুলে ধরেছে।

আরো পড়ুন