Ridge Bangla

১০ মাসে মব সৃষ্টি করে ১৭২ জনকে হত্যা

৩১ মে, রাজধানীর দারুস সালামের দ্বীপনগর এলাকায় ঘটে ভয়াবহ এক ঘটনা। মাদক কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে তানভীর ও ফাহিম নামের দুই তরুণকে মাইকিং করে ডেকে এনে এলাকাবাসী রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করে। পুলিশ জানায়, তারা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পরদিন, একই এলাকা থেকে রাসেল নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত দেশের আটটি বিভাগে মব গঠন করে অন্তত ১৭২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কোথাও চোর বা ছিনতাইকারী অপবাদে, কোথাও রাজনৈতিক বিরোধ বা নিছক সন্দেহের ভিত্তিতে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী:

  • ঢাকায়: ৮০ জন

  • চট্টগ্রামে: ২৮ জন

  • বরিশাল ও রাজশাহীতে: ১৬ জন করে

  • খুলনায়: ১৪ জন

  • রংপুরে: ৭ জন

  • ময়মনসিংহে: ৬ জন

  • সিলেটে: ৫ জন নিহত হয়েছেন

সবচেয়ে বেশি হত্যা হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, যখন এক মাসেই প্রাণ হারান ২৮ জন।

অনেকক্ষেত্রে নিহতদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ ছিল না। কেবল গুজব, সন্দেহ বা পুরনো শত্রুতার জেরেই তাঁরা মবের শিকার হন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘‘আইনের বাইরে কাউকে পিটিয়ে হত্যা করা হত্যাকাণ্ড—এটি দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ। এতে অংশগ্রহণকারী সবাই সমানভাবে দায়ী।’’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বারবার জনগণকে আইন নিজের হাতে না তোলার আহ্বান জানালেও বাস্তবে এর প্রতিফলন সীমিত। তবে কিছু ঘটনায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় মব প্রতিহত করা গেছে। যেমন—১৬ মে ধানমণ্ডিতে একজন প্রকাশককে কেন্দ্র করে গঠিত মব থানা পুলিশের ওসি ক্যশৈন্যু মারমার দৃঢ়তায় ছত্রভঙ্গ করা হয়। ঢাকাসহ রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রামেও কয়েকটি মব প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, মব গঠন রোধে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন