বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন এবং এই ঘটনার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে দায়ী করেন।
মমতা বলেন, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও শুধুমাত্র ভাষার ভিত্তিতে এই অন্যায় করা হচ্ছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, কাজের সন্ধানে মুম্বাইয়ে যাওয়া পাঁচজন শ্রমিক—মিনারুল শেখ, নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, মেহবুব শেখ, ডাবলু শেখ ও মুস্তফা কামাল—কে শুধু বাংলায় কথা বলার অভিযোগে স্থানীয় পুলিশ আটক করে। এরপর কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাদের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিএসএফও যাচাই না করেই কুচবিহার সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশ ইন করে। পরে বিজিবি তাদের আটক করে লালমনিরহাটে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিধানসভায় মমতা বলেন, “লজ্জা করে না আপনাদের! আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও অন্যান্য পরিচয়পত্র থাকার পরেও শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার এই কাজ করেছে। আমি তাদের ধিক্কার জানাই।”
সম্প্রতি ভারত থেকে সীমান্তে ‘পুশ ইন’ প্রক্রিয়া উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, ৭ মে থেকে ৩ জুনের মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে ১ হাজার ২৪৪ জনকে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বৈঠক ও কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও এসব বন্ধ হয়নি।
বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “সীমান্তে পুশ ইন না করে প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের কূটনৈতিকভাবে ফেরত পাঠাতে ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে।”