সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই সরকার জারি করেছে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫। রবিবার (২৫ মে) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অধ্যাদেশ প্রকাশ করে। এর আগে, গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের ২৯তম বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
নতুন এই অধ্যাদেশে ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ-এর চারটি ধারা পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ধারাগুলোতে বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও কর্তব্যপালনের ব্যত্যয়জনিত কর্মকাণ্ডের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো হলো:
১. এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া যা অন্য কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্যে বাধা দেয়।
২. ছুটি ছাড়া বা যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা বা কর্মবিরতি পালন করা।
৩. অন্য কর্মচারীকে অনুপস্থিত থাকতে, কর্মবিরতিতে অংশ নিতে বা কর্তব্য পালনে বিরত রাখতে উসকানি বা প্ররোচনা দেওয়া।
৪. কোনো কর্মচারীর কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া।
এ ধরণের কর্মকাণ্ডকে “অসদাচরণ” হিসেবে গণ্য করা হবে এবং অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া যাবে কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা। শাস্তির মধ্যে রয়েছে:
-
নিম্নপদে অবনমিতকরণ
-
চাকরি থেকে অপসারণ
-
বরখাস্ত
অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য সর্বোচ্চ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ কার্যদিবস, এবং এই প্রক্রিয়ায় বিভাগীয় মামলা ছাড়াও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের বিশেষ বিধানটি ২০১৮ সালে বাতিল করা হয়েছিল। তবে এবার তা সংশোধিত আকারে পুনর্বহাল করা হলো।
এই অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ করে আসছেন, যা দেশজুড়ে প্রশাসনিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।