জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র শহীদ রাব্বি মাতব্বরের মরদেহ ৯ মাস পর ঢাকার মিরপুর কবরস্থান থেকে উত্তোলন করে তার পটুয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে এনে পুনরায় দাফন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার পর সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
রাব্বির মরদেহ ভোররাতে বাড়িতে পৌঁছানোর পরপরই হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জানাজায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং হাজারো গ্রামবাসী অংশ নেন।
শহীদ রাব্বির বাবা জুয়েল মাতব্বর জানান, তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রাব্বি ছিল সবচেয়ে ছোট। সে ঢাকার মিরপুরে নিজ বাসার পাশের তা’লীমুল কোরআন মাদ্রাসায় হাফেজি করছিল এবং ইতোমধ্যে ১৩ পারা কোরআন মুখস্থ করেছিল।
ঘটনার দিন ছিল ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই। সেদিন রাতে ঢাকা মডেল কলেজের সামনে দিয়ে মিছিল যাচ্ছিল। কৌতূহলবশত রাব্বি ও মাদ্রাসার আরও কয়েকজন ছাত্র বাইরে বের হয়ে মিছিল দেখতে যায়। এসময় পুলিশের গুলিতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও রাব্বি একটি ভ্যানের নিচে আশ্রয় নেয়। ঠিক তখনই গুলিবিদ্ধ হয় সে।
স্থানীয়দের বাধার মুখে পুলিশ রাব্বির মৃতদেহ নিয়ে যেতে পারেনি। পরে আশপাশের মানুষ তাকে আজমল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জুয়েল মাতব্বর অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর রাতে ছেলের লাশ বাড়ি নিতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বাধা দেন এবং হুমকি দেন যে, “তোমার ছেলে মিছিলে কেন গিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।” বাধ্য হয়ে রাব্বিকে ঢাকার মিরপুরে দাফন করতে হয়।
পটপরিবর্তনের পর রাব্বির লাশ পুনরায় নিজ জেলায় নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালতের নির্দেশে ১০ এপ্রিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার পর ১৩ এপ্রিল রাতে রাব্বির লাশ পটুয়াখালীতে আনা হয়।