মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাজেট বিলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া একাধিক পোস্টে মাস্ক বিলটিকে ‘জঘন্য, ন্যক্কারজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এটি আমেরিকার নাগরিকদের কাঁধে ভয়াবহ ঋণের বোঝা চাপাবে।
আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, মাস্ক লিখেছেন,
“আমি দুঃখিত, কিন্তু আমি আর এটা সহ্য করতে পারছি না। কংগ্রেসের এই বিশাল, আপত্তিকর এবং অহেতুক ব্যয়বহুল বিলটি একটি জঘন্য ও ঘৃণ্য বিষয়। যাঁরা এর পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের লজ্জা হওয়া উচিত।”
পরে আরও ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আড়াই ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করবে এবং জাতীয় ঋণ ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “কংগ্রেস আমেরিকাকে দেউলিয়া করছে।”
ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের অন্যতম অর্থনৈতিক পরিকল্পনা হিসেবে পরিচিত এই বাজেট বিলটির নাম ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’। এতে করছাড় অব্যাহত রাখা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে ৪৬.৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ, ও জাতীয় ঋণের সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তবে বিপুল এই ব্যয় সামলাতে গিয়ে বিলটিতে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বড় ধরনের কাটছাঁটের প্রস্তাব রয়েছে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (CBO) জানিয়েছে, মেডিকেইডে ৬৯৮ বিলিয়ন ডলার এবং খাদ্য সহায়তা (SNAP)-এ ২৬৭ বিলিয়ন ডলার কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এই প্রস্তাব নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় শিবিরেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিলটি ২২ মে ভোরে ২১৫–২১৪ ভোটে প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়। ডেমোক্রেটদের সবাই এর বিরুদ্ধে ভোট দেন। শুধু দুইজন রিপাবলিকান—থমাস ম্যাসি ও ওয়ারেন ডেভিডসন—দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে বিলটির বিরোধিতা করেন।
এই বিতর্কিত বাজেট বিল ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে, যার প্রভাব ট্রাম্প প্রশাসনের জনপ্রিয়তার ওপরও পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।