ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে একটি এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে বিমানটি আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। একে গত এক দশকের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
উড়োজাহাজটিতে ছিলেন ২৩০ জন যাত্রী, ১০ জন ক্রু ও ২ জন পাইলট। যাত্রীদের মধ্যে ভারতের ১৬৯ জন, যুক্তরাজ্যের ৫৩ জন, পর্তুগালের ৭ জন এবং কানাডার ১ জন নাগরিক ছিলেন। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির মৃত্যুও নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের শনাক্তে আত্মীয়-স্বজনদের ডিএনএ নমুনা দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য স্বাস্থ্যসচিব ধনঞ্জয় দ্বিবেদী।
উড়োজাহাজটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের ২৩ নম্বর রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন করে এবং গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দর। উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরই জরুরি সংকেত পাঠানো হয়, যা কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে যায়। ফ্লাইটরাডার ওয়েবসাইট জানায়, সে সময় উড়োজাহাজটি মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায় ছিল।
ঘটনার পরপরই জানা যায়, ২৯৪ জন মারা গেছেন। তবে পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনেক মরদেহের দ্বিখণ্ডিত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে, ফলে প্রকৃত সংখ্যা কিছুটা কম। এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি কতজন বিমানের যাত্রী এবং কতজন মাটিতে থাকা মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান রমেশ বিশ্বাসকুমার (৪০)। তিনি ১১এ সিটে, জরুরি নির্গমন পথের পাশে ছিলেন। হাসপাতালে শুয়ে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে তিনি বলেন, “হঠাৎ বিকট শব্দ। চোখ খুলতেই দেখি চারপাশে নিথর শরীর। দৌড়ে পালাতে গিয়ে কেউ একজন আমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়।”
এই দুর্ঘটনা ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজের ইতিহাসে প্রথম বড় ধরনের বিপর্যয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিমাননিরাপত্তা সংস্থা অ্যাভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ভারতীয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বোয়িং যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে এবং ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল পাঠানো হয়েছে।