ভারতের মণিপুর রাজ্যের কুকি জনজাতি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর জেলায় গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবারের এই ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, একটি গাড়ি থেকে তিনজনের মৃতদেহ এবং আরও একজন নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল এবং ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১২টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, দক্ষিণ মণিপুরের ঘটনাস্থলে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে এবং আততায়ীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, থেনখোথাং হাওকিপ (৪৮), যিনি নিহতদের একজন, ছিলেন কেএনএর (কুকি ন্যাশনাল আর্মি) উপপ্রধান। কেএনএ কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সশস্ত্র অংশ এবং ২০০৭-০৮ সালে ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
অপরদিকে, কেএনএর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেড কুকি ন্যাশনাল আর্মি (ইউ-কেএনএ) দাবি করেছে, হাওকিপ তাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছেন এবং অন্তত ৩০ জন ইউ-কেএনএ সদস্যকে হত্যা করেছেন। এর মধ্যে শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন। প্রতিশোধ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে ইউ-কেএনএ এক বিবৃতিতে স্বীকার করেছে।
চূড়াচাঁদপুর হাসপাতালে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তারা হলেন মাতেজাং অঞ্চলের থেনখোথাং হাওকিপ ওরফে থাহপি (৪৮), তেসেং গ্রামের সেইখোগিন (৩৫), চেংকোন এলাকার লেঙ্গোহাও (৩৫), এবং কোয়েট গ্রামের ৭২ বছর বয়সী ফলহিং নামের এক নারী।
উল্লেখ্য, মণিপুরে গত দুই বছর ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় ও কুকি-জো আদিবাসীদের মধ্যে সংঘাত চলছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যটি রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে থাকলেও সহিংসতা বন্ধ হয়নি।