গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনায় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পৈতৃক সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে ছোট ভাই সোলাইমান হোসেন সেলিমকে (৫০) ‘শহীদ’ দেখিয়ে হত্যা মামলা করেছেন তার বড় ভাই গোলাম মোস্তফা ওরফে মস্তু (৫২)। ঘটনার প্রায় এক মাস পর, ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদেরসহ ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১৫০–২০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ৩ আগস্ট রাজধানীর কাজলা এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেলিম নিহত হন। মামলায় সাক্ষী করা হয় পরিবারের অন্য দুই সদস্য হেলাল উদ্দিন (৫৫) ও আবুল হোসেন (৫৪)কে।
তবে স্থানীয়দের দাবি, সেলিম জীবিত আছেন এবং ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ধামর গ্রামের বেলতলি বাজারে মুদি দোকান চালান। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর স্থানীয় পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে, পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ থেকেই সেলিমকে মিথ্যাভাবে ‘নিহত’ দেখিয়ে মামলা করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পিতার মৃত্যুর পর জমি ভাগাভাগি নিয়ে চার ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। সেলিমের ছেলে না থাকায় তার দুই মেয়ে রয়েছে, এই সুযোগে তার জমি দখলের উদ্দেশ্যে এই ষড়যন্ত্র করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা একজন পরিচিত সন্ত্রাসী, যার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি প্রায় ১৫ বছর ধরে এলাকায় নেই। ফুলবাড়িয়া থানার ওসি রুকনুজ্জামান জানান, মস্তু একজন স্বীকৃত ডাকাত এবং সরকারি সুবিধা নেওয়ার জন্যই হয়তো ভুয়া মামলার আশ্রয় নিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, সেলিম জীবিত কি না তা নিশ্চিত করতে আদালতের মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মামলার একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাদী পলাতক এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।