ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কাশ্মীর ইস্যুতে সামরিক উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। ২০০১ সালের সংসদ হামলা, ২০১৬ সালের উরি হামলা কিংবা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা ও বালাকোট অভিযানের মতো ঘটনাগুলোও দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়িয়েছিল।
সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় ২২ এপ্রিল, যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। এর জবাবে ১ মে রাতে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে আরও ২৬ জন নিহত হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ১৫ ভারতীয় নাগরিককে হত্যা করে। এই পাল্টাপাল্টি হামলার ফলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা ঘনিয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের সংঘাত শুধু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তি
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)-এর তথ্য অনুযায়ী:
-
ভারতের পারমাণবিক ওয়ারহেড: আনুমানিক ১৭০টি
-
পাকিস্তানের পারমাণবিক ওয়ারহেড: আনুমানিক ১৭০টি
উল্লেখযোগ্যভাবে, উভয় দেশ জাতিসংঘের পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।
সামরিক শক্তির তুলনা:
-
ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট (২০২৪): প্রায় ৮৬ বিলিয়ন ডলার
-
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট: ১০ বিলিয়নের কিছু বেশি
-
সক্রিয় সেনা সংখ্যা: ভারত ১৪.৫ লাখ, পাকিস্তান ৬.৫ লাখ
-
ট্যাংক: ভারত ৪,২০১টি, পাকিস্তান ২,৬২৭টি
-
মোবাইল রকেট লঞ্চার: পাকিস্তান ৬০০টি, ভারত ২৬৪টি
এই পার্থক্য সত্ত্বেও, পাকিস্তানের কৌশলগত মোতায়েন ও আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখনই দুই দেশ সংযম না দেখালে দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসবে। যুদ্ধের ফলে শুধু প্রাণহানি নয়, বরং খাদ্য সংকট, বাণিজ্য ব্যাঘাত এবং সার্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে গোটা অঞ্চল।