Ridge Bangla

ট্রাম্প-মাস্ক জুটির দ্বন্দ্ব কত দূর গড়াতে পারে?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের অস্বাভাবিক রাজনৈতিক জুটি ভেঙে পড়েছে। সম্পর্কের এই নাটকীয় অবসান এখন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নিয়ে ইলন মাস্কের তীব্র সমালোচনার পর ট্রাম্প এটিকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে থাকা সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন। হোয়াইট হাউস থেকে এক ভাষণে ট্রাম্প জানান, তিনি মাস্কের ওপর ‘খুবই হতাশ’।

পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়। মাস্ক দাবি করেন, কুখ্যাত অর্থলোলুপ ও যৌন অপরাধী জেফরি অ্যাপস্টেইনের গোপন নথিতে ট্রাম্পের নাম রয়েছে, যদিও তিনি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

এই বিরোধের জেরে মাস্ক ঘোষণা দেন, স্পেসএক্স যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মহাকাশ কর্মসূচি থেকে সরে আসবে। একইদিনে টেসলার বাজারমূল্য থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি কমে যায়।

ট্রাম্প বলেন, “আমি ইলনের ওপর খুব হতাশ। আমি তাকে অনেক সহায়তা করেছি।” তিনি জানান, মাত্র এক সপ্তাহ আগেই হোয়াইট হাউসে মাস্কের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল। পরে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সে (মাস্ক) পাগল হয়ে গেছে। তার উপস্থিতি বিরক্তিকর ছিল।”

মাস্কও পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, “ট্রাম্প অকৃতজ্ঞ। আমার সহায়তা ছাড়া তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিততে পারতেন না।” পাশাপাশি আরও দাবি করেন, “ট্রাম্পের নাম অ্যাপস্টেইনের নথিতে রয়েছে।”

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, মাস্কের টুইট হতাশাজনক। তিনি বলেন, ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ মাস্কের পছন্দের নীতিগুলো বাদ পড়ায় তিনি ক্ষুব্ধ।

ট্রাম্প হুমকি দেন, “আমাদের বাজেট বাঁচানোর সহজ উপায় হলো মাস্কের সরকারি চুক্তি ও ভর্তুকি বাতিল করা।” জবাবে মাস্ক জানান, তিনি স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযান ধ্বংস করা শুরু করবেন।

প্রথমদিকে ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ‘সরকারি ব্যয় দক্ষতা দপ্তর’ (ডগে)-এর প্রধান ছিলেন এবং হোয়াইট হাউসে রাত কাটানো ও ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ ট্রাম্পের সঙ্গে ভ্রমণ করতেন। তবে মাত্র চার মাসেই মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেন মাস্ক।

সম্প্রতি মাস্ক ‘এক্স’-এ একটি জরিপ চালিয়ে প্রশ্ন তোলেন, “আমি কি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব?”—যা রাজনৈতিক হুমকি হিসেবেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তার বিপুল সম্পদ ব্যয় করে তিনি রিপাবলিকানদের মধ্যে তার বিরোধীদের সরাতে প্রস্তুত।

এদিকে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ স্টিভ ব্যানন দাবি করেছেন, “মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা উচিত।” এখন গোটা ওয়াশিংটন তাকিয়ে আছে—এই দ্বন্দ্ব আরও কত দূর গড়ায় তা দেখার জন্য।

আরো পড়ুন