রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণাসহ ১২ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। শনিবার (৩ মে) অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে এসব দাবি পেশ করেন সংগঠনের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক। সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। সমাবেশে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দাবি উপস্থাপনকালে মাওলানা মাহফুজুল হক ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে ও জুলাই আন্দোলনে নিহত মাদরাসাছাত্র-শিক্ষকদের স্মরণ করেন এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
হেফাজতের ১২ দফা দাবি নিম্নরূপ:
১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও পুনর্গঠন: কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন বাতিল করে আলেমদের পরামর্শে নতুন ধর্মভিত্তিক কমিশন গঠন।
২. আল্লাহর ওপর আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা পুনর্বহাল এবং বহুত্ববাদী নীতিমালা থেকে সরে আসা।
৩. শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার: দ্রুত বিচার নিশ্চিত এবং নির্বাচনের আগেই দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা।
৪. আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা: দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ও সকল কার্যক্রম বন্ধ।
৫. ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে আইন: কঠোর আইন প্রণয়ন ও বিদ্যমান আইনে শাস্তির ধারা বাতিলের সুপারিশ প্রত্যাহার।
৬. চিন্ময় দাসের বিচার: সাইফুল ইসলাম হত্যায় উসকানিদাতা হিসেবে জামিন বাতিল ও শাস্তির দাবি।
৭. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার: আলেম ও ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার ও বিচার।
৮. ইসরায়েল ও ভারতের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান: গাজা ও ভারতের মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদে কূটনৈতিক পদক্ষেপ ও পণ্য বর্জন।
৯. ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক: প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।
১০. রাখাইন করিডোর বাতিল: রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে প্রত্যাহার দাবি।
১১. পার্বত্য চট্টগ্রামে মিশনারি রোধ: বিদেশি মিশনারিদের তৎপরতা বন্ধ ও ইসলামী দাওয়াতে সহযোগিতা।
১২. কাদিয়ানীদের নিষিদ্ধ ঘোষণা: রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদের নিষিদ্ধ ও ধর্মবিরোধী কার্যক্রম বন্ধ করা।
বক্তারা বলেন, এই দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। অবহেলা করলে সরকারকে “পরিণতি ভোগ করতে হবে” বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।