২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১ হাজার ১৩৬ জন পোশাক শ্রমিক, আহত হয়েছিলেন আরও প্রায় দুই হাজার। এক যুগ পেরিয়ে গেলেও আজও অনেক নিখোঁজ শ্রমিকের কোনো খোঁজ মেলেনি। আহতরা এখনো বহন করছেন সেই দিনের মানসিক ও শারীরিক ক্ষত।
রানা প্লাজা ধসের বার্ষিকীতে নিহতদের স্মরণে বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাভারে রানা প্লাজার বেদীর সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন হতাহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
তারা দাবি জানান, ২৪ এপ্রিলকে ‘গার্মেন্টস শিল্পে শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা, রানা প্লাজার সামনে একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য আজীবন ক্ষতিপূরণ, এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, “এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত হয়নি।”
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, “আহত শ্রমিকরা চিকিৎসার জন্য আজও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বিচার তো দূরের কথা, ন্যায্য ক্ষতিপূরণও মেলেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জড়িতদের বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণ সহযোগিতার দাবি জানাই।”
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে পুলিশের দায়ের করা হত্যা মামলা, রাজউকের দায়ের করা নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের মামলা এবং দুদকের দুটি দুর্নীতির মামলার মধ্যে কেবল সম্পদের তথ্য গোপনের মামলাটির নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি মামলাগুলোর এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। এক যুগ পরেও রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি হয়ে আছে বিচারহীনতার প্রতীক, আর ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনে এক অনন্ত অপেক্ষা।