দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে আইসিসির কোনো শিরোপা জিততে না পারায় দক্ষিণ আফ্রিকার গায়ে ‘চোকার্স’—অর্থাৎ চাপের মুখে ভেঙে পড়া দলের—তকমাটি লেগে গিয়েছিল। বড় ম্যাচে বারবার ব্যর্থ হওয়ার কারণে এই শব্দটি প্রায় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল দলটির নামের সঙ্গে।
ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস যেন অন্য সব দলের চেয়ে আলাদা। বছরের পর বছর, টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্ট, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দিশেহারা হয়ে হেরে যাওয়ার দৃশ্য ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে নতুন কিছু ছিল না। বিশেষ করে ১৯৯২ সাল থেকে শুরু করে ১২ বার সেমিফাইনাল এবং একবার ফাইনাল খেলে একটিও শিরোপা না জেতার বেদনা বহন করতে হয়েছে তাদের। যদিও ১৯৯৮ সালে ঢাকায় আইসিসি নকআউট ট্রফিতে একবার শিরোপা জিতেছিল, কিন্তু তা ছিল টুর্নামেন্টের প্রাথমিক সংস্করণ।
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের কাছে ৭ রানে হেরে ট্রফি হাতছাড়া করার পর, ‘চোকার্স’ তকমা যেন আরও পোক্ত হয়েছিল। এমনকি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও অস্ট্রেলীয় খেলোয়াড়েরা ব্যাটিং করতে থাকা এইডেন মার্করাম ও টেম্বা বাভুমাকে বিদ্রূপ করে বলেছিলেন, “তোমরা তো চোকার্স, আর কয় রান তোলার আগেই শেষ হয়ে যাবে!”—তবে দক্ষিণ আফ্রিকা এবার সেসব ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে।
লর্ডসের ঐতিহাসিক জয়, আইসিসির ফাইনালে পাঁচ উইকেটের জয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রমাণ করেছে—‘চোকার্স’ শব্দটি তাদের আর মানায় না। ম্যাচশেষে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে মার্করাম বলেন, “অতীতে আমাদের নিয়ে যত প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, সৌভাগ্যবশত এখন সবকিছুরই উত্তর দেওয়া হয়ে গেছে। এই তকমা ঝেড়ে ফেলা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।”
অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও জানান, এই জয় যেন দেশের ক্রিকেটে আরও অনেক ট্রফি জয়ের সূচনা হয়—এটাই তাঁর প্রত্যাশা। অবহেলিত বাভুমার অধিনায়কত্বে পাওয়া এই সাফল্য যেন নতুন দিনের সূচনা করল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের জন্য।