বৈভব সূর্যবংশীর ব্যাটে আগুন জ্বললো। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি! আইপিএলে নজির গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ব্যাট করতে নেমে নতুন কীর্তি গড়ল বিহারের এই কিশোর ব্যাটার।
জয়পুরের পিচ থেকে তার ব্যাটিং তাণ্ডব দেখে পুরো গ্যালারি যেন তাজ্জব বনে গেল। ডাগআউট থেকে সতীর্থরা তো বটেই, মাঠের ভেতরে গুজরাট টাইটান্সের খেলোয়াড়রাও অবাক চোখে তাকিয়ে দেখেছেন তার চার-ছয়ের বৃষ্টি। গুজরাটের ২০৯ রান যেন ছেলেখেলা বানিয়ে ফেলেছিলেন বৈভব। সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে দলকে অনায়াসে জেতালেন ১৪ বছর বয়সী ওপেনার। ২৫ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতেছে স্বাগতিক রাজস্থান রয়্যালস।
বৈভবের ব্যাটিংয়ের সময় মনে হচ্ছিল ক্রিস গেইলের ঝড়ো সেঞ্চুরির রেকর্ড তিনি ভেঙে দেবেন। আইপিএলে মাত্র ৩০ বলে সেঞ্চুরির কীর্তি আছে তার। দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ইউসুফ পাঠানের দখলে ছিল। তিনি ৩৭ বলে শতক ছুঁয়েছিলেন।
বৈভব তার চেয়ে দুই বল কম খেলে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। শতরানের ইনিংস খেলার পথে ১১টি ছক্কা তোলেন এই তরুণ। চার মারেন সাতটি। ১৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি এবং ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে আইপিএল ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচ রঙিন করেন। চলতি আইপিএলে এটি দ্রুততম ফিফটি এবং আইপিএল ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম শতক। আইপিএলের নিলামে বৈভবকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় কিনেছিল রাজস্থান।
উল্লেখ্য, বৈভবের বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরের তাজপুরে। চার বছর বয়সে বাবার হাত ধরে ক্রিকেট শেখা শুরু তার। সাড়ে সাত বছর বয়সে বৈভবের বাবা সঞ্জীব তাকে নিয়ে যান পটনার এক ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেখানেই কোচ সৌরভ কুমার প্রথম দেখেন বৈভবকে। অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এত কম বয়সে তার ব্যাটিং দেখে। নেটে নামার জন্য ছটফট করতেন বৈভব। আর সেখানে তার বয়সী বোলারেরা প্রায় পাত্তাই পেত না। বড়দের সঙ্গে খেলানো হত বৈভবকে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে বৈভব। বাবা কৃষক। একটি দোকানও আছে। জমি বিক্রি করে ছেলের ক্রিকেট শেখার খরচ জুগিয়েছেন সঞ্জীব। সমস্তিপুর থেকে ভোর ৪টার সময় বেরোতে হয়। পাটনা পৌঁছাতে সাড়ে ৭টা বাজে। সেখানে কোচ মণীশ ওঝার কাছে প্রশিক্ষণ নেন বৈভব। কাকভোরে খাবার বানিয়ে দেন বৈভবের মা। মণীশ বললেন, সমস্তিপুরে বৈভবের বাড়ি থেকে পাটনায় আমার অ্যাকাডেমির দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। প্রতি দিন অনুশীলন করতে আসা সম্ভব ছিল না। এক দিন অন্তর আসত ও। তবে যে দিন আসত, সেদিন অন্তত ৫০০ বল খেলত।