সিরাজগঞ্জে গাভী পালন করে দুধ উৎপাদনে ঝুঁকছেন জেলার বহু কৃষক। বাজারে দুধের ভালো দাম, সরকারি–বেসরকারি সহায়তা এবং উদ্যোক্তাবান্ধব প্রকল্পের ফলে গ্রামবাংলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য খামার, যা দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সিরাজগঞ্জে প্রায় ৩৩ হাজার গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে রয়েছে ১৫ লাখেরও বেশি গরু, যার অধিকাংশই দুধাল গাভী। শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খামারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই বাড়ির আঙিনায়ও ছোট পরিসরে গাভী পালন করছেন।
জেলায় বছরে প্রায় ৭ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয় এবং প্রতিদিন গড়ে ১৯ লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ হচ্ছে। মিল্কভিটা, প্রাণ, আড়ংসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খামারিদের কাছ থেকে প্রতি লিটার গড়ে ৫৫ টাকায় দুধ ক্রয় করছে। ফলে প্রতিদিনই প্রায় দেড় কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে দুধ বিক্রয় ঘিরে।
শাহজাদপুর, কামারখন্দ, উল্লাপাড়াসহ চরাঞ্চলে পূর্বে গড়ে ওঠা দুধ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো এখন আরও বিস্তৃত হয়েছে। এসব এলাকার দুধ সরবরাহ হচ্ছে বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা ছাড়াও দেশের নানা প্রান্তে।
দুধভিত্তিক শিল্প যেমন ঘি, মিষ্টি, দই, পনির, ছানা উৎপাদনে এগিয়ে আসছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। ফলে বছরে দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারমূল্য ছাড়িয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
এনডিপি বাস্তবায়িত পিকেএসএফের ‘স্মার্ট ডেইরি’ ও ‘সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ’ প্রকল্প চালু রয়েছে শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়ায়। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন বায়োগ্যাস, কম্পোস্ট সার ও গোখাদ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, “সরকারি–বেসরকারি সহায়তায় খামারিরা এখন কম খরচে লাভজনকভাবে দুধ উৎপাদন করছেন। বাজারে দুধের চাহিদা ভালো থাকায় এই খাতে কৃষকদের আগ্রহও বাড়ছে।”