জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষের শেষ ঠিকানা তৈরি করে যাওয়া মনু মিয়াও অবশেষে চলে গেলেন নিজের শেষ গন্তব্যে। কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের এই নিবেদিতপ্রাণ মানুষটি শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
বাদ আসর জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয় জয়সিদ্ধি এলাকার কবরস্থানে। এ সময় তার নামাজে জানাজায় অংশ নেন জয়সিদ্ধি ও আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
জীবদ্দশায় ৩ হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়ে মানুষের শেষ গন্তব্যের সহযোগী ছিলেন মনু মিয়া। ১৯৭২ সাল থেকে তিনি এ কাজ করে আসছিলেন। মৃত্যুর পর এবার তার জন্য কবর খুঁড়েছেন পাঁচজন—করণশী গ্রামের হবু রহমান (৬০), টুক্কু মিয়া (৫৫), আলগাপাড়ার ইয়াছিন মিয়া (৫০), ডুয়েরপাড়ের বাতেন মিয়া (৫০) ও মারুফ খান সুজাত (২৯)।
মনু মিয়ার চাচাতো ভাই আবদুর রউফ জানান, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত ১৪ মে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার পর গ্রামে ফেরেন, কিছুটা সুস্থ ছিলেন, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত।
তার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও মনু মিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে তার ছবি ও গল্প।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মনু মিয়া কখনো কবর খোঁড়ার জন্য পারিশ্রমিক নিতেন না। এমনকি খাবারের ব্যবস্থাও নিজের খরচেই করতেন। এই নিঃস্বার্থ মানুষটির মৃত্যুতে হারিয়ে গেল এক ব্যতিক্রমী মানবসেবক।