দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ঐকমত্য কমিশনের সাম্প্রতিক উদ্যোগ। শনিবার (১৬ আগস্ট) কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রেরণ করা হয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর খসড়া। এতে ৮৪টি বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং ৮ দফা অঙ্গীকারনামা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দেশের গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের এক ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই গণআন্দোলনকে ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণ হিসেবে আখ্যা দিয়ে খসড়ায় বলা হয়, তখন গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জোট ও সামাজিক শক্তি সম্মিলিতভাবে সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন প্রক্রিয়া, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়েছে।
খসড়ার মূল বিষয়বস্তুতে বলা হয়েছে, জনগণের ইচ্ছাকেই রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি ধরা হবে। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ; তাদের ইচ্ছাই সর্বোচ্চ আইন হিসেবে গণ্য হবে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে, শহীদদের মর্যাদা ও আহতদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন বা নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সনদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে। নির্বাচন, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থাসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে কাঠামোগত সংস্কার চালানো হবে। সনদের ব্যাখ্যা বা প্রয়োগ সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের হাতে। অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই কার্যকর করা হবে।
ঐকমত্য কমিশন মনে করছে, এই খসড়া রাজনৈতিক সংলাপকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। এর মধ্য দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করার পথ উন্মুক্ত হবে।
