২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ এবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ইতিহাস এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে এই গণআন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ যুক্ত করার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, চলতি বছর বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য বইয়ের কিছু অধ্যায়ে প্রাসঙ্গিকভাবে ‘জুলাই আন্দোলন’ এর উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানভিত্তিক বইয়েও বিষয়টি সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
এনসিটিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত ইতিহাস বইগুলো মূলত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। যদি জুলাই অভ্যুত্থান অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তবে তা ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় উপস্থাপিত হবে। নতুন প্রজন্মকে সমসাময়িক সময়ের রাজনৈতিক-সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত অভ্যুত্থানকে বিশ্লেষকরা নতুন প্রজন্মের প্রতিবাদ রাজনীতির এক যুগান্তকারী অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা আন্দোলনটি ঢাকার শহীদ মিনার, শাহবাগ, টিএসসি, নীলক্ষেত ও প্রেস ক্লাব এলাকায় তীব্র বিক্ষোভের রূপ নেয়।
ছাত্রসমাজ দুর্নীতি, নিপীড়ন, শিক্ষা বৈষম্য ও নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। একপর্যায়ে আন্দোলন গণজাগরণে রূপ নেয় এবং লক্ষাধিক মানুষ সরকারের পতনের দাবিতে রাস্তায় নামে। ৫ আগস্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এই অভ্যুত্থান চূড়ান্ত রূপ পায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং অনুমোদনের পর পাঠ্যক্রম উন্নয়ন কমিটি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।