Ridge Bangla

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন দেশের উন্নয়নকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

উপদেষ্টা বলেন, “মাদক ব্যবহার, চোরাচালান ও আসক্তির ফলে দেশের জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে। উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে আমাদের তরুণ সমাজকে সুস্থ, কর্মক্ষম ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। মাদক থেকে যুব সমাজকে মুক্ত রাখা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি নারী, শিশু ও কিশোরদের মাদক চোরাচালানে ব্যবহারের বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন। এই প্রবণতা একদিকে যেমন অপরাধ বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে তরুণদের আসক্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

উপদেষ্টা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক মাদকবিরোধী কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিয়মিত সভা, সেমিনার, বিতর্ক ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তিনি নতুন ধরনের সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক মাদকের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন মাদক বাজারে আসছে। এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মোকাবিলায় সরকার নতুন কৌশল ও আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “১৮ কোটির দেশের জন্য অধিদপ্তরে মাত্র ২,৯৪৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, যার মধ্যে এনফোর্সমেন্টে আছেন ১,৬২২ জন। তারা ৬৪ জেলা কার্যালয়, ৮ বিভাগীয় ও ১টি বিশেষ জোনে দায়িত্ব পালন করছেন।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। তিনি বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই যুদ্ধে নামতে হবে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, “আমাদের দেশে মাদক তৈরি হয় না, বাইরে থেকে আসা মাদকই সমস্যা তৈরি করছে। সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার।”

তিনি জানান, সরকার বিভাগীয় শহরগুলোতে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

আরো পড়ুন