গাজা উপত্যকায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত সাধারণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রবিবার (২০ জুলাই) একদিনেই অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৬৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিং এলাকায়। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, জিকিম ক্রসিংয়ে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী লরি আসার অপেক্ষায় থাকা ভিড়ের মধ্যে ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালায়। একই দিন দক্ষিণ গাজার আরেকটি বিতরণ কেন্দ্রে ছয়জন নিহত হন। এর আগের দিনও একইভাবে ৩৬ জন নিহত হয়েছিলেন। গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহের সময় গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯০০ মানুষ।
ত্রাণপ্রার্থী আহমেদ হাসুনা জানান, “আমার সঙ্গে একজন যুবক ছিল। হঠাৎ আমাদের দিকে গ্যাস ছোড়া শুরু হয়। গ্যাসেই সবাই প্রায় নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিল। কোনো রকমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছি।” স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রিজেক বেতার বলেন, আহত এক বৃদ্ধকে তিনি সাইকেলে তুলে নিয়ে আসেন। তার কণ্ঠে হতাশা, “আমরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই, খাবার নেই, বাঁচার কোনো উপায় নেই। আমরা শুধু আল্লাহর ওপর ভরসা করছি।”
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানায়, গাজায় প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের ২৫টি ত্রাণবাহী ট্রাকের বহরে গুলি চালানো হয়। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, “ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করা বেসামরিক মানুষের ওপর সহিংসতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ মোকাবিলায় ‘সতর্কতামূলক গুলি’ চালিয়েছিল। একইসঙ্গে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত হতাহতের সংখ্যারও বিরোধিতা করেছে আইডিএফ।
অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যেও এভাবে ত্রাণের লাইনে প্রাণ হারাচ্ছেন বেসামরিক মানুষ। আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।