ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আজ এক বছর পূর্ণ করেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থান বিজয় অর্জন করে। এর তিন দিন পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয় এবং নির্বাচন, শাসনব্যবস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচারব্যবস্থা, অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ শুরু করে।
৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করে এবং ‘জুলাই সনদ’-এর খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
গত ১১ মাসে বৈদেশিক ঋণদাতাদের কাছে ৪ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিক চিঠিও পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে।
সরকার একাধিক সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন, স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার ও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। এসব কমিশনের দেওয়া বহু সুপারিশ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এ বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৪৮ শতাংশে নেমেছে, যা গত ৩৫ মাসে সর্বনিম্ন। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য রয়েছে। সরকারের কার্যকর বাজার মনিটরিং ও মধ্যস্বত্বভোগী নিয়ন্ত্রণের ফলে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
প্রবাসীদের আস্থার ফলে রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে। গত অর্থবছরে রেকর্ড ৩০৩৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা রপ্তানি আয় ৯ শতাংশ বাড়িয়েছে এবং টাকার মান ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী করেছে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা সঠিক পথে রয়েছে।
