স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দাঁড়কাক’ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে। নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকীর এই চলচ্চিত্রটি এবার নির্বাচিত হয়েছে ফ্রান্স ও কানাডার দুটি মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে।
চলচ্চিত্রটি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে প্রদর্শিত হবে ফ্রান্সের টুলুজ ইন্ডিয়ান সিনেমা ফেস্টিভালের দশম আসরে এবং কানাডার সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব মন্ট্রিলের ১৪তম আসরে। টুলুজ উৎসবে এ বছর মাত্র ১৩টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকে প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ‘দাঁড়কাক’। চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে টুলুজ শহরের ‘শেমিন দ্য লা বিউট মাল্টিপারপাস হল’-এ, ২৪ এপ্রিল বেলা ২টায়। এই উৎসব চলবে ২৩ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং এটি দক্ষিণ এশীয় চলচ্চিত্রের জন্য ফ্রান্সে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।
উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছে আরও কিছু আলোচিত চলচ্চিত্র, যেমন— অসমীয় নির্মাতা রিমা দাসের ‘ভিলেজ রকস্টার ২’, বলিউড অভিনেতা বোমান ইরানির পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘দ্য মেহতা বয়েজ’, নেপালি নির্মাতা দীপক রাউনিয়ারের ‘পূজা, স্যার’ এবং নির্মাতা নিস্ঠা জৈনের প্রামাণ্যচিত্র ‘ফার্মিং দ্য রেভুল্যুশন’।
অন্যদিকে, কানাডার মন্ট্রিলে আয়োজিত ১৪তম সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে ২৪ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত সিনেমা হলে এবং ১ থেকে ১০ মে পর্যন্ত অনলাইনে। এখানে ‘দাঁড়কাক’ ২২টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে।
‘দাঁড়কাক’ শহীদুল জহিরের একটি ছোটগল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত। এর চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক নিজেই। চলচ্চিত্রটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। আরও অভিনয় করেছেন আমিনুর রহমান মুকুল, ইকবাল হোসেন, টুনটুনি সোবহান, ফজলুল হক, তাহুয়া লাবিব তুরা, এবিএম সাইদুল হক, নবাগত জেরিন আক্তার শিমুল ও আখলাকুজ্জামান খান।
পরিচালক জায়েদ সিদ্দিকী জানান, “এই চলচ্চিত্রটি আমার জন্য একান্তই ব্যক্তিগত অনুভব থেকে নির্মিত। প্রবীণদের অবহেলার চিত্র এবং তাদের জীবনের নিঃসঙ্গতা ফুটে উঠেছে এতে। আমরা একদিন হয়তো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাব, তবে তাতে আমাদের মূল্য কমে না।”
এখন পর্যন্ত ‘দাঁড়কাক’ ১০টি দেশের ১৬টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশে ষষ্ঠ হিল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ভারতের শিমলা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়া প্রশংসিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের উৎসবে।
এই ধারাবাহিক সাফল্য চলচ্চিত্রটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করছে।