একজন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, আর অন্যজন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। বহুদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকলেও তাদের মাঝে দীর্ঘ সময় ধরে উত্থান-পতনের ইতিহাস রয়েছে। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মাস্ক সরকারি দায়িত্বে থাকলেও, তখনো দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল মধুর। তবে সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ইঙ্গিতে সেই সম্পর্কে চিড় ধরার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সেই টানাপোড়েন প্রকাশ্য রূপ নেয়।
বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের অভিশংসনের দাবিকে সমর্থন জানান। এটি তাদের মধ্যকার চলমান বাকযুদ্ধের সর্বশেষ ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মালয়েশীয় ডানপন্থী লেখক ইয়ান মাইলস চিওং এক্স-এ এক পোস্টে লেখেন, “প্রেসিডেন্ট বনাম ইলন। কে জিতবে? আমি বাজি ধরছি ইলনের পক্ষে। ট্রাম্পকে অভিশংসন করা উচিত এবং জেডি ভ্যান্সকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা উচিত।” মাস্ক ওই পোস্টে ২০ মিনিট পর শুধু লিখেন, “হ্যাঁ।”
এই ঘটনার পর ট্রাম্প ও মাস্কের সম্পর্কে হঠাৎ করেই জনসমক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওভাল অফিসে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্জের সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প বলেন, “মাস্কের আচরণে আমি বিস্মিত ও হতাশ।” এর জবাবে মাস্ক দাবি করেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে তারও ভূমিকা ছিল। এরপর তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে অভিযোগ করেন, যৌন অপরাধে দণ্ডিত ধনকুবের জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ছিল।
মাস্ক লিখেন, “এবার বড় বোমা ফেলার সময়। ট্রাম্প এপস্টাইনের নথিতে আছেন। এটাই আসল কারণ যে এই নথিগুলো এখনো প্রকাশ করা হয়নি।” পরে এক্স-এ আরও লেখেন, “এই পোস্টটি মনে রাখুন। সত্য একদিন প্রকাশ পাবে।”
হোয়াইট হাউস অবশ্য মাস্কের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে। সন্ধ্যাবেলায় এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “ইলনের এই আচরণ দুঃখজনক। তিনি শুধু এ কারণে অসন্তুষ্ট যে একটি বড় সুন্দর বিলে তার পছন্দের নীতি নেই।” প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট এখন ঐতিহাসিক এই আইন পাস করানো এবং দেশকে আবার মহান করে তোলার দিকেই মনোযোগী।”
ট্রাম্পও মাস্কের অবস্থানে আঘাত করে বলেন, “ইলন যদি আমার বিরোধিতা করতেই চায়, সেটা মাসখানেক আগেই করা উচিত ছিল। কংগ্রেসে উত্থাপিত অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই বিলটিতে ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় কমানো হয়েছে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর ছাড় রয়েছে। যদি এটি পাস না হয়, কর ৬৮ শতাংশ বেড়ে যাবে।”