হজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন, যা মুসলমানের আত্মিক শুদ্ধি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম উপায়। এ ইবাদতের প্রতিটি ধাপে রয়েছে ত্যাগ, ভালোবাসা ও আনুগত্যের প্রতিফলন। আর এই হজকে নিখুঁতভাবে পালন করে আমাদের জন্য আদর্শ স্থাপন করেছেন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তার হজের প্রতিটি ধাপই সুন্নাহ ও হিকমতের অনুপম নিদর্শন।
প্রিয় নবী (সা.) ইহরাম বাঁধেন যুল হুলাইফায়। সেখানে নামাজ আদায় শেষে তালবিয়া পাঠ করেন—“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…”। তিনি তালবিয়া উচ্চস্বরে পাঠ করতেন এবং সাহাবিদেরও তা করতে উৎসাহিত করতেন।
মক্কায় প্রবেশ করে নবীজি (সা.) কাবা শরিফ তওয়াফ করেন। প্রথম তিন চক্করে রমল (দ্রুত চলা) করেন এবং পরবর্তী চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হাঁটেন। এরপর সাফা-মারওয়া সায়ি করেন, যেখানে দাঁড়িয়ে আল্লাহর একত্ব ও মাহাত্ম্য ঘোষণা করেন এবং গভীর মনোযোগে দোয়া করেন।
৮ জিলহজ তিনি মিনায় অবস্থান করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। ৯ জিলহজ আরাফার ময়দানে গিয়ে ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ প্রদান করেন এবং যোহর ও আসরের নামাজ কসর করে একসঙ্গে আদায় করেন। এরপর মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করে ফজরের পর মাশআরুল হারামে দোয়া করেন।
১০ জিলহজ মিনায় ফিরে জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ, কোরবানি এবং মাথা মুণ্ডন করেন। এরপর তওয়াফে জিয়ারত সম্পন্ন করেন। বাকি তাশরিকের দিনগুলোতে তিনি মিনায় অবস্থান করে প্রতিদিন কঙ্কর নিক্ষেপ করেন।
প্রিয় নবী (সা.)-এর হজ আমাদের শিক্ষা দেয়—নিষ্ঠা, ভালোবাসা এবং পরিপূর্ণ আনুগত্যের মাধ্যমে কীভাবে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। তার হজের প্রতিটি ধাপে রয়েছে ইবাদতের সৌন্দর্য, কর্তব্যবোধ ও আধ্যাত্মিক গভীরতা।