অনিয়ম, ঋণ জালিয়াতি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে ছয়টি ব্যাংককে একীভূত করে সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে গভর্নর জানান, এই ছয়টি ব্যাংক হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক। এর মধ্যে পাঁচটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল, আর একটি নজরুল ইসলাম মজুমদারের অধীনে।
গভর্নর বলেন, “আমরা আশা করছি, ছয়টি ব্যাংককে সরকারের মালিকানায় এনে প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ করা হবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে।”
তবে এই সরকারি মালিকানা হবে সাময়িক। পরবর্তীতে এসব ব্যাংকের শেয়ার সাধারণ জনগণের কাছে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর নতুন স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টরদের হাতে হস্তান্তর করা হবে ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ।
গভর্নরের ভাষায়, “আমরা চাই প্রত্যেকটা গ্রাহক তাদের টাকা ফিরে পাক, কোনো ক্ষতি যেন না হয়। বিনিয়োগকারীরা যেই হোক না কেন, যেন সুন্দরভাবে ব্যাংকগুলো পরিচালনা করতে পারে।”
তিনি আরও জানান, যেসব ব্যাংকের ক্যাপিটাল অ্যাডেকোয়েসি রেশিও (CAR) ঘাটতিতে রয়েছে, সেগুলোর রেশিও আগামী চার বছরের মধ্যে ১২.৫ থেকে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে রিস্ক-ওয়েটেড অ্যাসেটের বিপরীতে কমপক্ষে ১২.৫ শতাংশ মূলধন রাখতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই ছয় ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ, দুর্নীতি, এবং নিয়মকানুন অমান্য করে আসছিল। তাই ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।