বলিউডের কিং খান শাহরুখ খান উপহার দিয়েছেন এমন বহু আইকনিক সিনেমা, যা ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে আজও উজ্জ্বল। তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘বাজিগর’। এই ছবি আজও দর্শকদের মনে বিশেষ জায়গা দখল করে আছে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘বাজিগর’-এর সহ-চিত্রনাট্যকার রবিন ভাট স্মৃতিচারণা করে জানান, শুরুতে সালমান খান ও অক্ষয় কুমার এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। তবে শাহরুখ খান একটি কঠিন শর্তে কাজ করতে রাজি হন—স্ক্রিপ্টে একটুও পরিবর্তন করা চলবে না।
রবিন ভাট জানান, একদিন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ‘আ কিস বিফোর ডাইং’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন? উত্তরে তিনি জানান, সিনেমাটি না দেখলেও আসল উপন্যাসটি তিনি পড়েছেন এবং বিশ্বাস করেন, তা থেকে একটি দুর্দান্ত সিনেমা বানানো সম্ভব। তখনই তাকে আব্বাস-মাস্তান পরিচালিত ‘বাজিগর’-এর জন্য স্ক্রিনপ্লে লেখার অনুরোধ করা হয়। সেখান থেকেই ‘বাজিগর’-এর যাত্রা শুরু।
তবে ছবির কনসেপ্ট ছিল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ—নায়ককেই দেখা যাবে নেতিবাচক চরিত্রে। তাই উপযুক্ত অভিনেতা পাওয়া ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথমে অক্ষয় কুমারকে প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি রাজি হননি। এরপর সালমান খানের কাছে গিয়েও সাড়া মেলেনি। তখন রবিন বুঝতে পারেন, এমন সাহসী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শাহরুখ খানই সেরা পছন্দ।
রবিন আরও বলেন, সেই সময় হোটেল ভিলায় প্রায়ই শাহরুখের সঙ্গে তার দেখা হতো। শাহরুখ তখন ‘রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান’-এর কাজ করছিলেন। একদিন নৈমিত্তিক আড্ডার মধ্যে রবিন ‘বাজিগর’-এর গল্প বলতে শুরু করেন। ইন্টারভেল পর্যন্ত গল্প শুনেই শাহরুখ ছবিতে কাজ করতে রাজি হয়ে যান, এমনকি পুরো গল্প শেষ না শোনার সিদ্ধান্তও নেন।
তবে শাহরুখ এক কঠিন শর্ত দেন—চিত্রনাট্যে কোনো পরিবর্তন করা যাবে না, চরিত্রের মূল রূপ নষ্ট করে তাকে অতিরিক্ত ভালো বা ‘গ্রে’ বানানোর চেষ্টা করা যাবে না। তার এই সাহসী অবস্থান পরিচালকদেরও অনুপ্রাণিত করে মূল ভাবনায় অটল থাকতে।
এরপর যা ঘটেছে তা তো ইতিহাস! শিল্পা শেঠি, কাজল, রাকী এবং জনি লিভারের অভিনয়ে সমৃদ্ধ ‘বাজিগর’ হয়ে ওঠে বলিউডের অন্যতম কালজয়ী ছবি।