কাশ্মীরে বন্দুক হামলাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুধু সীমান্তেই নয়, আঘাত হেনেছে আন্তর্জাতিক আকাশপথেও। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে প্রায় ৫৫০টি নির্ধারিত বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী, এয়ারলাইনস ও বাণিজ্যিক যোগাযোগের ওপর।
রিয়েল-টাইম ফ্লাইট ট্র্যাকিং সেবা ফ্লাইটরাডার ২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে মোট নির্ধারিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটের ১৬ শতাংশ এবং ভারতে তিন শতাংশ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানে ১৩৫টি এবং ভারতে ৪১৭টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
বেশ কয়েকটি ভারতীয় উড়োজাহাজ সংস্থা ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে তাদের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। রাজস্থান, পাঞ্জাবসহ সীমান্তবর্তী নগরেও ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। স্পাইসজেট জানিয়েছে, ধর্মশালা, লেহ, জম্মু, শ্রীনগর ও অমৃতসরসহ ভারতের উত্তরাঞ্চলের বিমানবন্দরগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় ফ্লাইট চলাচলে প্রভাব পড়েছে। ইন্ডিগো এয়ারলাইনস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে জানিয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে ওইসব গন্তব্যে তাদের ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর পর্যন্ত জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, যোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় ও রাজকোটের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এই সংঘাত দুই দেশের বিমান যোগাযোগে একটি বড় ধাক্কা দিয়েছে, যা শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, আন্তর্জাতিক রুটগুলোকেও জটিল করে তুলেছে। এমিরেটস, ইতিহাদ, কাতার এয়ারওয়েজসহ উপসাগরীয় এয়ারলাইনসগুলো একের পর এক পাকিস্তানগামী ফ্লাইট বাতিল করছে। পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে ইউরোপ-এশিয়া রুটের ফ্লাইটগুলো চালাতে গিয়ে সময় ও জ্বালানি ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফ্লাইটরাডার ২৪ জানিয়েছে, অন্তত দুই ডজন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিকল্প পথে চালানো হয়েছে, যার ফলে পর্যটন, বাণিজ্য ও লজিস্টিক খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।