একজন হামজা চৌধুরীর সাফল্য বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের চিন্তাধারা। তার খেলা ও জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) দেশের সব ক্রীড়া ফেডারেশনকে তার মতো প্রবাসী ক্রীড়াবিদ খুঁজে বের করার নির্দেশনা দিয়েছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলামের সই করা চিঠি দেশের সব ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী ক্রীড়াবিদদের দেশের হয়ে খেলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
হামজা চৌধুরী ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ফুটবলার, যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন। তার আগমনে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। হামজার সাফল্যের পর আরও প্রবাসী ক্রীড়াবিদকে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এনএসসি চিঠিতে জিমন্যাস্ট জ্যাক আশিকুল ইসলাম ও ফুটবলার সামিতের নামও উল্লেখ করেছে। সামিত কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল কালাভরি এফসিতে খেলছেন এবং এর আগে কানাডার জাতীয় দলের হয়েও মাঠে নেমেছেন।
বাংলাদেশ ফুটবল দলে প্রবাসীদের খেলার ইতিহাস বেশ পুরনো। ২০১৩ সালে ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়া জাতীয় দলে যোগ দেন এবং এখন তিনি দলের অধিনায়ক। এরপর তারিক কাজী, রাহবার ও কাজেম শাহ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন।
শুধু ফুটবলে নয়, অন্যান্য খেলাতেও প্রবাসী ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক আসরে সাফল্য এনে দিয়েছেন। যেমন—ইংল্যান্ডপ্রবাসী ইমরানুর রহমান এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকসে সোনা জিতেছেন, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাইক সিজার লন্ডন অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন, জিমন্যাস্ট আলী কাদির ও সাঁতারু জুনাইনা আহমেদ আন্তর্জাতিক আসরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
এনএসসি জানায়, প্রবাসী ক্রীড়াবিদদের আনতে নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র হালনাগাদ করার প্রক্রিয়ায় সরকার সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে। ক্রীড়া ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে যাতে এ প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়। প্রবাসী ক্রীড়া সংগঠকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের চিহ্নিত করা হবে।
প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে।