মুখে মাস্ক পরলেই এবার ধরা পড়তে পারে কিডনির রোগ—শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমনই এক অত্যাধুনিক পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা। তারা জানিয়েছেন, একটি বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল মাস্ক রোগীর নিঃশ্বাসের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে কিডনির জটিলতা শনাক্ত করতে সক্ষম।
‘এসিএস সেন্সর’ নামক বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুযায়ী, ইতালীয় গবেষক কোরাডো ডি নাটালে এমন একটি সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরি করেছেন, যেটি কিছু সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখলেই রোগ নির্ণয় করতে পারবে। রক্ত বা প্রস্রাবের পরীক্ষার প্রয়োজন নেই—শুধু রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসই যথেষ্ট।
গবেষকের মতে, কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির নিঃশ্বাসে অ্যামোনিয়াসহ বিভিন্ন রাসায়নিক নির্গত হয়। নতুন এই মাস্ক সেই রাসায়নিকগুলোর উপস্থিতি বিশ্লেষণ করে জানাতে পারে রোগ রয়েছে কি না এবং থাকলে কোন স্তরে রয়েছে।
মাস্কের মূল কাজ হলো ‘মেটাবোলাইট’ শনাক্ত করা—যেগুলি শরীরে হজমপ্রক্রিয়া ও অন্যান্য বিপাকীয় কার্যক্রমের ফলে তৈরি হয়। কিডনির রোগে অ্যামোনিয়া, ইথানল, প্রপানল এবং অ্যাসিটোনের মতো উপাদান নিঃশ্বাসের সঙ্গে বের হয়, এবং এই বিশেষ মাস্ক সেগুলো শনাক্ত করতে সক্ষম।
মাস্কটিতে রয়েছে ছোট ছোট রুপার ইলেক্ট্রোড, যা পলিমার ও পরফাইরিনের স্তর দিয়ে আচ্ছাদিত। এই স্তরগুলি শ্বাসে থাকা রাসায়নিক উপাদানগুলো শনাক্ত করে এবং সেই তথ্য পাঠায় একটি ইলেক্ট্রোড রিডারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই মাস্ক প্রয়োগ করা হলে প্রায় ৮৪ শতাংশ ক্ষেত্রে তা সঠিকভাবে কিডনির সমস্যা শনাক্ত করতে পেরেছে। এমনকি অনেক রোগীই যাঁরা আগে কিডনির সমস্যার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না, তাদের ক্ষেত্রেও এটি সঠিকভাবে কাজ করেছে এবং পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়েছে।