আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসছে নতুন নকশার টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে দুই টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত নয় ধরনের নতুন নোট ছাপা হচ্ছে, যার মধ্যে প্রথমবারের মতো থাকবে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের’ গ্রাফিতি এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা চিত্র।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, সাধারণত নতুন নোট ছাপাতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। তবে গ্রাহকদের চাহিদা ও ঈদের বিশেষ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে এবার সীমিত পরিসরে কিছু নতুন নোট আগেই বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সবগুলো নোট একসাথে ছাড়া হবে না, বরং পর্যায়ক্রমে ছাড়া হবে।
এদিকে বাজারে এখনো বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নতুন নোটের স্বল্পতা বিরাজ করছে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন নোটের চাহিদা বাড়লেও তা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। অনেক গ্রাহক বাধ্য হয়ে ছেঁড়া ও পুরনো নোট বদলাতে খোলাবাজারের দ্বারস্থ হচ্ছেন, যেখানে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে নোট পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায় ছেঁড়া নোট বদলানোর চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোতে নোট পরিবর্তনের নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন থাকায় অনেকেই তা করতে পারছেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর ভল্টে বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট থাকলেও তা সরবরাহে রয়েছে সীমাবদ্ধতা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ইস্যুকৃত নোটের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। প্রতিবছর প্রায় ১৫০ কোটি পিস নতুন টাকার চাহিদা থাকলেও দেশে একমাত্র টাকশাল ছাপতে পারে সর্বোচ্চ ১২০ কোটি পিস। ফলে নিয়মিতভাবে নতুন নোটের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে এবং তার প্রভাব পড়ছে সাধারণ গ্রাহকদের ওপর।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, ঈদের আগে সীমিত পরিসরে নতুন নোট বাজারে ছাড়লে এই সংকট কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।