Ridge Bangla

রিজার্ভ চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত মেজবাউল হক পেলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মেজবাউল হককে একযোগে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়ায় ব্যাংকের অভ্যন্তরে ব্যাপক ক্ষোভ ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

তদন্তসূত্রে জানা গেছে, রিজার্ভ চুরির ঘটনার সময় তিনি বিদেশি দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে গোপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেটা সেন্টারে প্রবেশের অনুমতি দেন, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ আলামত ধ্বংস হয়। ঘটনার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে তথ্য গোপন করায় সিআইডির তদন্তে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এমনকি তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।

এই পরিস্থিতিতে তাকে হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ ও ২, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি), ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডস), সচিব বিভাগ এবং ইইএফ ইউনিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিআরপিডি নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ডস সেই নীতির বাস্তবায়ন ও তদারকি করে। একই ব্যক্তির হাতে এই দুটি বিভাগের দায়িত্ব থাকা স্বার্থসংঘাত তৈরি করে বলে মনে করছেন ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্ব পাওয়ার পর মেজবাউল হক তার ঘনিষ্ঠদের বিভিন্ন বিভাগে বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, যা প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন বলেন, “ডস ও বিআরপিডি কখনোই একজন ইডির আওতায় থাকা উচিত নয়। বাইরে থেকে নতুন ইডি আসলে দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস করা হবে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে এত বিতর্কিত এবং তদন্তাধীন ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল রাখা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এতে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাবমূর্তি ও স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, আলোচিত ‘নগদ’ কেলেঙ্কারিতেও মেজবাউল হকের নাম উঠে এসেছে। তার সময়েই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয় ‘নগদ’-কে, যদিও তাদের কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংযুক্তি ছিল না। পরবর্তীতে প্রাথমিক তদন্তে প্রায় ১,৭০০ কোটি টাকা পাচার ও ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন