পাবনার ঈশ্বরদী, যাকে ‘লিচুর রাজধানী’ বলা হয়, সেখানে এবার বিরূপ আবহাওয়ার কারণে লিচুর ফলন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এতে করে এই বছর স্বাদুপ্রীতি ফলটির স্বাদ গ্রহণের সুযোগ কমে যাবে বলে ধারণা করছেন চাষিরা।
অনেক এলাকায় অর্ধেকের বেশি গাছে মুকুল আসেনি। যেসব গাছে মুকুল এসেছে, সেখানেও প্রচণ্ড গরমের কারণে গুটি ঝরে পড়ছে। কোথাও কোথাও লিচুর গুটি ফেটে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মসিউর রহমান জানান, অনিয়মিত গরম ও শীতের কারণে লিচুর উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তিনি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বা মোবাইল টাওয়ারের প্রভাবের কথা নাকচ করে দিয়েছেন।
ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ও সাহাপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ বাগানে মুকুল সংকট দেখা গেছে। এতে চাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাতটি লিচু বাগানের মালিক ব্যবসায়ী জিসান ইসলাম বলেন, “এবার আমার অধিকাংশ গাছে কাঙ্ক্ষিত মুকুল আসেনি, ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”
কৃষি বিভাগের হিসাবে, এবার ঈশ্বরদীতে লিচুর উৎপাদন প্রায় ৭০ শতাংশ কমে যেতে পারে। যদিও ফলন কম হলেও বাজারে লিচুর দাম কিছুটা বেড়ে যেতে পারে।
চলতি মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার টন, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। দেশের অন্যান্য লিচু উৎপাদনকারী জেলাগুলোতেও একই ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।