চলমান অচলাবস্থার মধ্যেই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক হযরত আলী কর্মস্থল ত্যাগ করে ঢাকায় গেছেন। সোমবার (১৯ মে) সকালে খুলনা ত্যাগের বিষয়টি তিনি মোবাইলে কুয়েটের একজন সিনিয়র ডিনকে জানান।
জানা যায়, ৪ মে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলেও পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে আসছেন। প্রথম সাতদিনের আলটিমেটাম শেষ হয় ১৫ মে। এরপর শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ১৮ ও ১৯ মে কর্মসূচি পালিত হয় এবং সোমবার দ্বিতীয় দফায় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে উপাচার্য দপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা।
অবস্থানের সময় শিক্ষকরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে জানতে পারেন তিনি খুলনায় নেই। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, “যেহেতু ভিসিকে পাওয়া যায়নি, তাই মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় দিয়ে অচলাবস্থা নিরসনের আহ্বান জানাচ্ছি। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকরা প্রস্তুত। আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই। শিক্ষার্থীরাও আমাদের পাশে আছে।”
তবে তিনি কুয়েট প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে বলেন, “অচলাবস্থার অষ্টম দিনে এসেও এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।”
রেজিস্ট্রারের বরাত দিয়ে জানা যায়, উপাচার্য মঙ্গলবার খুলনায় ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে, তবে এখনো কোনো অফিসিয়াল পত্র পাওয়া যায়নি এবং কারও ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছেন কি না, সেটিও অনির্দিষ্ট।
এদিকে কুয়েটের বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “উপাচার্য আমাকে শুধু মৌখিকভাবে ঢাকায় যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। কোনো দায়িত্বভার সংক্রান্ত কাগজ আমি পাইনি।”
অচলাবস্থার প্রতিবাদে শিক্ষকদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও দাবি তুলেছেন সাবেক উপাচার্যের সময় গঠিত তদন্ত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের। তবে অনেকে এটিকে সময়ক্ষেপণ হিসেবে দেখছেন।
১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের পরীক্ষা আটকে রয়েছে, প্রায় ১,০০০ শিক্ষার্থী সেশনজটে পড়েছে। আমরা চাই বর্তমান কমিটিই দ্রুত তদন্ত শেষ করুক এবং শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক হোক।”